• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

বাড়ির উঠানে শখের রঙিন মাছ চাষে সফল রায়হান

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৪ জুলাই ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

শখের বশে শুরু করলেও তিনি এখন সফল রঙিন মাছ চাষি। বাহারি রঙের বিদেশি মাছের চাষাবাদে মাসে বাড়তি আয় করছেন নীলফামারী সদরের রামগঞ্জ বাজার এলাকার তরুণ উদ্যোক্তা আবু রায়হান (২৮)। চার বছরেই তরুণ এ উদ্যোক্তা পেয়েছেন ব্যাপক সফলতা। শুরুতে বাড়ির উঠানের জন্য ৫০০ টাকায় ১০ পিস মিক্সগাপ্পি মাছ কেনেন। ছোট্ট পরিসরে প্রজেক্ট শুরু করলেও বর্তমানে ২১টি পাকা চৌবাচ্চায় করছেন চাষাবাদ।

জানা যায়, ২০২০ সালের শুরুতে করোনার সময়ে নীলফামারী শহরের একটি অ্যাকোরিয়াম ফিশের দোকান থেকে শখের বশে ৫০০ টাকা দিয়ে ১০ পিস রঙিন মাছ কেনেন রায়হান। তখন মাছের নামও জানতেন না তিনি। পরে জানতে পারেন, সেগুলো মিক্সগাপ্পি প্রজাতির ছিল। গ্রামের বাড়িতে বালতিতে রেখে দেন।

এর ১৫ দিন পর পানি পরিবর্তন করার সময় কয়েকটি মাছের পেটে ডিম দেখতে পান। পরে ডিম থেকে পোনা বাড়তে থাকে। এরপর আস্তে আস্তে চৌবাচ্চা তৈরি করে বাড়াতে থাকেন চাষ। কিছুদিন পরপরই মাছগুলো বাচ্চা দিতো। ধীরে ধীরে মাছ বাড়তে শুরু করে। এটি দেখে রঙিন মাছের ফার্ম করার স্বপ্ন বুনতে শুরু করেন। এখন তার খামারে ৩০ প্রজাতির মাছ আছে।

আবু রায়হান বলেন, ‘আমার এমন কিছু করার ইচ্ছা ছিল, যেখানে অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়। আমি দেখলাম, রঙিন মাছ চাষ আমাকে আনন্দ ও অর্থ দিচ্ছে। ব্যবসার পাশাপাশি এটি করতে তেমন কষ্ট হচ্ছে না। তাই বৃহৎ পরিসরে শুরু করার চেষ্টা করি। এ কাজে পরিবারের সবাই সহায়তা করে। অনেকটা খেলার ছলেই এ ফার্ম চলছে।’

এ মুহূর্তে প্রজেক্টে ২ লাখ টাকার সেটআপ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার খামারে বর্তমানে মিক্সগাপ্পি, শর্টটেইল, রেড টেইল, প্লাটিনাম ডাম্বু, ইয়ার অ্যালবাইনো কই, কই টক্সিডো, ব্লু হেড সামু রাই, রেড মস্কো, স্নাক স্কিন গাপ্পি, কোবরা, ব্ল্যাক বেলুন মলি, হোয়াইট বেলুন মলি, জেবরা, গ্লো টেট্রা, মুন টেইল মলি, কই কার্প, কমেট কাপ এবং মিকি মাউস প্লাটি আছে। এখানে আরও ইনভেস্ট করার পরিকল্পনা আছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার ফেসবুক পেজ ‘রঙিন মাছের খামার নীলফামারী’। সেখানে যোগাযোগ করে অনেকে এখানে আসেন। চাষের সংবাদে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতারা রঙিন মাছ কিনতে আসেন। পাশাপাশি নীলফামারী ও সৈয়দপুরের ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে নিয়ে যান। আকারভেদে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ১০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। সারাদেশে অক্সিজেন ব্যাগে এসব রঙিন মাছ পরিবহন করা হচ্ছে।’

বর্তমানে তার সংগ্রহে ৩০ প্রজাতির ২৫ হাজার রঙিন মাছ আছে। এসবের বাজারমূল্য ৪-৫ লাখ টাকা। তবে তিনি অভিযোগ করেন, তার এ মাছের খামারে মৎস্য কর্মকর্তাদের তেমন সহযোগিতা পাননি। বিভিন্ন সময়ে মাছের সাধারণত পাখনা ও ফুলকা পচা রোগ হয়। উঁকুনের আঘাতে ক্ষত তৈরি হয়। সেগুলো নিজ অভিজ্ঞতায় পরিমাণমতো লবণ, পটাশ, ফিটকিরি আর চুন ব্যবহার করে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। সরকারি সহযোগিতা পেলে পরিধি বাড়াতে চান তিনি।

এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু সাইদ বলেন, ‘পুরোপুরি আমদানিনির্ভর এ খাতের অর্ধেকের বেশি চাহিদা পূরণ করছেন রায়হানের মতো তরুণরা। বিদেশেও এর বেশ চাহিদা আছে। মাছ চাষে আগ্রহ বাড়াতে উদ্যোক্তাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

Place your advertisement here
Place your advertisement here