• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

কান্নারত অবস্থায় শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

রংপুর জেলায় দুই হাজার ১২৯টি কেন্দ্রে চার লাখ ৮৮ হাজার ৩৩৮ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ৩৩টি ওয়ার্ডের ২৯৭টি অস্থায়ী কেন্দ্রে এক লাখ ২৯ হাজার ৮৫০ শিশু এবং জেলার বাকি আট উপজেলায় এক হাজার ৮৩২টি কেন্দ্রের মাধ্যমে তিন লাখ ৫৮ হাজার ৪৮৮ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

আগামী শনিবার (১ জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৬-১১ মাস বয়সী ৬০ হাজার ৯৭৫ শিশুকে একটি করে নীল রঙের এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী চার লাখ ২৭ হাজার ৩৬৩ জন শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এজন্য সুপারভাইজার, স্বেচ্ছাসেবী, টিকাদান কেন্দ্র নির্ধারণ করাসহ প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে ‘জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২৪’ উপলক্ষ্যে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় ও রংপুর সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত পৃথক দুটি সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।

রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ৩৩টি ওয়ার্ডে ২৯৭টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ৪৪ জন সুপারভাইজার এবং ৫৯৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে ৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সী ২০ হাজার ১৫০ শিশুকে নীল রঙের এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী এক লাখ ৯ হাজার ৭০০ শিশুকে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যদি কোনো শিশুকে গত চার মাসের মধ্যে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়ে থাকে তবে সেই শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই।

তিনি আরও বলেন, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলে সাধারণত কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এরপরও যদি শিশুর বমি বমি ভাব হয় তাহলে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। শিশুকে ভরা পেটে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। কান্নারত অবস্থায় বা জোর করে কোনো শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। আস্ত বা গোটা ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। ক্যাপসুলের মুখ কাঁচি দিয়ে কেটে ক্যাপসুলের ভেতরের তরল ভিটামিন ‘এ’ শিশুকে খাওয়াতে হবে। তবে আগে থেকে ক্যাপসুলে মুখ কেটে রাখা যাবে না।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহাবুবুর রহমান মঞ্জু, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কামরুজ্জামান এবনে তাজ, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর (শাখা প্রধান) মো. আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় পুরাতন সদর হাসপাতাল সংলগ্ন সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াজেদ আলী বলেন, শনিবার (১ জুন) জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে রংপুরের আট উপজেলায় তিন লাখ ৫৮ হাজার ৪৮৮ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে ৬-১১ মাস বয়সী ৪০ হাজার ৮২৫ শিশুকে একটি করে নীল রঙের এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী তিন লাখ ১৭ হাজার ৬৬৩ শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব শিশুর মধ্যে এক হাজার ৭১৫ জন প্রতিবন্ধী রয়েছে।

প্রতিটি টিকা কেন্দ্রে এবং বড় হাট-বাজার, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট এবং রেলওয়ে স্টেশনের অস্থায়ী/ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রে এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে। সেদিন তিন হাজার ৬৬৪ জন স্বেচ্ছাসেবী, এক হাজার ৩০৭ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও ৩০৩ জন পরিবার-পরিকল্পনাকর্মী দায়িত্ব পালন করবেন। নির্ধারিত কেন্দ্রে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যেতে অভিভাবকদের অনুরোধ জানান।

ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ালে শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি কমবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পেইনের দিন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মায়েদেরকে শিশুর জন্মের পর পর শাল দুধ খাওয়ানো, শিশুর ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের বুকের দুধ বাচ্চাকে খাওয়ানো, ছয় মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি পুষ্টিকর এবং সুষম বাড়তি খাবার শিশুকে খাওয়ানোসহ পুষ্টি সংক্রান্ত বিভিন্ন ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হবে। শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ অন্ধত্ব প্রতিরোধ করাসহ শিশু মৃত্যু রোধ করে।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক অরবিন্দু কুমার মোদক, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (সমন্বয়কারী) ডা. নূরজাহান বিনতে ইসলাম, ইপিআই সুপারিনটেনডেন্ট সুলতান আহমেদসহ জেলা পুষ্টি কার্যক্রম ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, এ কর্মসূচিকে সার্থক করতে বাংলাদেশ সরকারকে ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল সার্বিক সহযোগিতা করছে।  শনিবার (১ জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নির্ধারিত টিকা কেন্দ্রসহ হাট-বাজার, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট ও রেলওয়ে স্টেশনের অস্থায়ী এবং ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রে এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে। সেদিন রংপুর সদর উপজেলার হরিদেবপুর ইউনিয়নের গোকুলপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করবেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান। একই দিন সকালে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনে মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর মাধ্যমে কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here