• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

এ যেন মধ্যযুগীয় বর্বরোচিত রোমহর্ষক ঘটনার পুনরাবৃত্তি

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২২ মে ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

লালমনিরহাটে নেশার টাকা না দেওয়ায় স্ত্রী আনিছা বেগমকে বেধড়ক পিটিয়েছেন স্বামী আজিজুল ইসলাম। শুধু তাই নয় এ সময় শ্বশুর-শাশুড়ির সহযোগিতায় আজিজুল তার স্ত্রীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্র ও ব্লেড দিয়ে কেটে ক্ষত স্থানে মরিচের গুঁড়া ও লবণ লাগিয়ে নির্যাতন করেন। এ যেন মধ্যযুগীয় বর্বরোচিত রোমহর্ষক ঘটনাকেও হার মানায়। বর্তমানে নির্যাতিত আনিছা বেগম লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ২ নম্বর ফুলগাছ গ্রামে।

এ ঘটনায় বুধবার (২২ মে) দুপুরে আনিছা বেগমের বাবা আমির হোসেন তিনজনকে আসামি করে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৪-১৫ বছর আগে আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গন্ধমরুয়া এলাকার আমির হোসেনের মেয়ে আনিছা বেগমের সঙ্গে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামের জাবুল ইসলামের ছেলে আজিজুলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর আনিছা বেগম ও আজিজুলের সংসার ভালোই চলছিলো। এর মধ্যে তাদের ঘরে এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানও জন্ম নেয়। গত কয়েক বছর থেকে হঠাৎ আজিজুল নেশায় আসক্ত হয়ে সবসময় আনিছার সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ করেন এবং মারপিট করেন। একপর্যায়ে নেশার টাকা না থাকলে আজিজুল তার স্ত্রী আনিছার কাছে টাকা চান। আনিছা সংসারে অশান্তি হওয়ার ভয়ে যতটুকু পারে স্বামীকে নেশা করার জন্য টাকা দেন।

একপর্যায়ে স্বামী আজিজুল ও শ্বশুর-শাশুড়ি আনিছাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসতে বলেন। আনিছা বাবার কাছে থেকে কিছু টাকা এনেও দেন। তারপরেও যখনি নেশার টাকা ফুরিয়ে যায় তখনি টাকার জন্য আনিছাকে চাপ দেন আজিজুল। আনিছা প্রথমে টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে নির্মম নির্যাতন সইতে হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ৯টার দিকে আজিজুল তার স্ত্রী আনিছাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে বললে আনিছা টাকা আনতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজিজুল তার স্ত্রী আনিছাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এতে আনিছা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার শ্বশুর ও শাশুড়ির সহযোগিতায় ব্লেড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থান কেটে ক্ষত স্থানে শুকনা মরিচ ও লবণ লাগিয়ে দেন। এ যেন মধ্যযুগীয় বর্বরোচিত রোমহর্ষক ঘটনাকেও হার মানায়। এ সময় আনিছা অসহ্য যন্ত্রণায় চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন আনিছাকে সাহায্যের জন্য ছুটে আসলে আজিজুল তাদেরকেও ধারালো অস্ত্র উঁচিয়ে মারতে যান।

খবর পেয়ে আনিছার বাবা দ্রুত মেয়ের বাড়িতে এসে গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে নির্যাতিত আনিছা বেগম লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

স্বামীর এমন বর্বরোচিত কর্মকাণ্ডের বিবরণ দিতে গিয়ে আনিছা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পুরো শরীরে ব্যাথা আর অসহ্য যন্ত্রণায় তিনি কোনো কথা বলতে পারছেন না।

এ ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশ ওসি (তদন্ত) স্বপন কুমার সরকার জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ভিকটিমের অবস্থা জানার জন্য হাসপাতালে অফিসার পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here