• সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৮ ১৪৩১

  • || ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

ব্রহ্মপুত্র নদের ধু ধু বালুচরে সোনার ফসল

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১১ মার্চ ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

কুড়িগ্রামের হলহলিয়া, সোনাভরি, জিঞ্জিরাম ও ব্রহ্মপুত্র নদের বালুচরে সোনার ফসল উৎপাদন করছেন কৃষকরা। বিগত বছরে চরের জমিগুলো সমতল না থাকায় কৃষকরা তাদের ফসল ফলাতে পারতেন না। 

বন্যার সময় পানি বৃদ্ধি পেয়ে এখানকার নদ-নদীর পাড় উপচে ও বাঁধ ভেঙে রৌমারী উপজেলা চত্বর পর্যন্ত বনার পানি প্রবেশ করে। এ সময় এখানকার কৃষকরা বিভিন্ন ফসলাদী চাষাবাদ করার সুযোগ পান না। জমি থাকলেও তাদের উপায় থাকে না।

ফাল্গুন চৈত্র মাস শুকনা মৌসুমে সোনাভরি, জিঞ্জিরাম, হলহলিয়া ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি শুকে ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়। এই বালুচরেই কৃষকরা গম, তিল, পেঁয়াজ গুয়েমুড়ি, বোরো ধান, বাদাম, মাসকলাইসহ বিভিন্ন ফসলাদী উৎপাদন শুরু করেন। 

এরই ধারাবাহিতায় কুড়িগ্রামের নদ-নদীর চরাঞ্চলের মানুষ জীবন জীবিকার তাগিদে জেগে উঠা বালুচরেই চাষাবাদের চেষ্টা করেন। নদের ভাঙনের কবলে পড়া নিঃস্ব চাষিরা বালুরচর পেয়ে খুবই খুশি। পেটে দু’মঠো ভাত জোগাতে তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে বালুচরে বিভিন্ন ফসলের চাষ করেন। 

চরাঞ্চচলের নারী, পুরুষ ও শিশুরা মিলে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গরুর হাল বা ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করছেন এবং বিভিন্ন জাতের বীজ বপন করছেন। এরইমধ্যে কৃষকরা পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ বাদামসহ অন্যান্য ফসল ঘরে তোলা শুরু করেছেন। 

তবে চলতি মাসের শেষের দিকে এখানকার চরাঞ্চল থেকে কৃষকরা গম, প্যারা, তিল, খিড়া, তরমুজ, ভুট্টা তারা ঘরে তুলতে পারবেন। এসব চরাঞ্চলে ফসল উৎপাদনে খরচও অনেক কম। ফলনও ভালো হওয়ায় লাভবান হচ্ছে চরাঞ্চলের কৃষকরা। 

স্থানীয় কৃষক মাসুদ রানা জানান, বালুচরে সামান্য চাষ দিয়ে ও অল্প পরিমাণে সার প্রয়োগের মাধ্যমে বীজ বপন করা যায়। বীজ গোজানোর পরে একটু পানির সেচ দিতে পারলে ফলন অনেক বেশি ভালো হয়। বর্ষা আসার আগেই অধিকাংশ ফসল বাড়িতে নিতে আমরা। 

ফুলকারচর এলাকার কৃষক আমির হোসেন জানান, নদী আমাদের সব জমি ভেঙে নিয়ে গেছে। এক টুকরো জমিও আমার নেই। অন্যের বালুরচরে ১৫ কাঠা জমি বর্গা নিয়ে গম বুনেছি। মেশিন দিয়ে পানি দিয়েছি। তাতে অল্প খরচে ভালো ফসল পাবো বলে মনে করছি। 

তিনি আরো জানান, পরিত্যক্ত এসব বালুচরে যদি আগাম বন্যা না আসে তাহলে আমরা কৃষকরা তিল, কাউন, পাট জাতের মতো ফসলগুলো সুন্দরভাবে ঘরে তুলতে পারবো। এতে আমার মতো অনেক কৃষকেরা নদী ভাঙনের দুর্ভোগ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।

রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী জানান, ব্রহ্মপুত্র নদসহ রৌমারী উপজেলার কয়েকটি নদীতে অসংখ্য চর পড়েছে। নতুন নতুন চর জেগে উঠায় জমির পরিমাণ হিসেব করা এখনও শেষ হয়নি। এসব চরে নদী ভাঙন কবলিত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা পুনরায় চাষাবাদ শুরু করেছে। 

এখন এসব চরের কাছে গেলে বালুরচর আর দেখা যায়না। শুধু ফসলের মাঠ চোখে পড়ে। এখানে কৃষি অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের মাঝে কিছু সার ও বিভিন্ন বীজ দেয়া হয়েছে। আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সব সময়ে কৃষকদের ভালো পরামর্শ দিয়ে আসছেন। এতে চরাঞ্চলের কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন।

Place your advertisement here
Place your advertisement here