• রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৭ ১৪৩১

  • || ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

পঞ্চগড়ে সমতল ভূমির চা পাতা সংগ্রহ শুরু

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১ মার্চ ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

‘উত্তরের প্রবেশদ্বার, সবুজের চায়ের সমাহার’ নামে খ্যাত উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের সমতল ভূমির চা বাগান থেকে দুই মাস বন্ধ থাকার পর আজ পহেলা মার্চ থেকে কাঁচা চা পাতা সংগ্রহ শুরু হয়েছে। ফলে কৃষকরা তাদের বাগানের পরিচর্যা, গাছের সুষ্ঠুভাবে পুনিং / ছাঁটাই করে বাগান থেকে নতুন পাতা সংগ্রহ শুরু করেছেন। 

অন্য দিকে চা প্রক্রিয়াজাত কারখানাগুলো তাদের প্রস্তুতি শেষ করে চা পাতা ক্রয় করছে কৃষকদের কাছে। তবে নতুন করে চা পাতার দাম নির্ধারণ না হওয়ায় এবং বিগত বছরের তুলনায় সার, কীটনাশক ও উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা। 

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চা উৎপাদন অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি দেশের শেষ প্রান্তের জেলা পঞ্চগড়ে দুই মাস বন্ধ থাকার পর আজ পহেলা মার্চ থেকে ২৪টি চা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা চালু হয়েছে। চা প্রক্রিয়াজাত কারখানাগুলো তাদের প্রস্তুতি শেষ করে কৃষকদের কাছে চা পাতা ক্রয় শুরু করেছে।  

অন্যদিকে জেলার ৫ উপজেলার চাষিরা তাদের বাগান থেকে চা পাতা সংগ্রহ করে কারখানায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছে। তবে চলতি বছরে নতুন করে কাঁচা চা পাতার দাম নির্ধারণ না হওয়ায় পূর্বের দামে চা পাতা বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। ফলে চায়ের ন্যায্য দাম না পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। 

কৃষকরা বলছেন, বিগত বছরগুলোতে কাঁচা চা পাতার দাম ভালো পেলেও কয়েক বছর ধরে চা পাতার দাম হ্রাস ও কারখানা কর্তৃপক্ষ সিন্ডিকেট করে চা পাতা কর্তন করে নেয়ার কারণে ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। গত বছর কাঁচা চা পাতার দাম নির্ধারণ করা হয় প্রতি কেজি ১৮ টাকা দরে। গত বছর কোনো রকম উৎপাদন খরচ তুলতে পারলেও এবছর সার, কীটনাশক, পরিচর্যা, মজুরী খরচসহ উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে চা পাতার মূল্য নির্ধার না হওয়ায় ন্যায্য দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চা কৃষকরা। তাদের দাবি চা পাতার দাম বৃদ্ধি, কারখানা সিন্ডিকেট বন্ধ ও দ্রুত সময়ের মধ্যে অকশন মার্কেট বাস্তবায়ন হলে তারা তাদের চায়ের ন্যায্য দাম পাবেন।

সদর উপজেলার অমরখানা এলাকার চা চাষি মানিক খান বলেন, আমরা ২ মাস গাছের পরিচর্যা করে আজ থেকে পাতা সংগ্রহ শুরু করছি। তবে নতুন করে দাম নির্ধারণ না হওয়ায় আমরা চিন্তায় পড়ছি। এবার অনেক খরচ হয়েছে আমাদের। 

তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় এলাকার চাষি বকুল হোসেন বলেন, আমরা নতুন পাতা কারখানায় নিয়ে গিয়ে আগের দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।  

তেঁতুলিয়া গ্রীন কেয়ার চা কারখানার ম্যানেজার মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু বলেন, চা পাতার দাম নির্ধারণ হয় অকশন মার্কেটের ওপর। কাঁচা চা পাতার দাম নির্ধারণ করে থাকে দাম নির্ধারণ কমিটি। তবে ভালো পাতার ভালো দামে কেনা হচ্ছে। সামনে অকশনলর নিলাম হয়েছে সেখানে তৈরিকৃত চা পাতার দাম ভালো পাওয়া গেলে চাষিরাও তাদের কাঁচা চা পাতা ভালো দামে বিক্রি করতে পারবে। 
 
এদিকে চা বোর্ড সূত্রে জানা যায়,  উত্তরবঙ্গের ৫ জেলার মোট ১২ হাজার ৭৯ দশমিক ৬ একর সমতল জমির চা আবাদের মধ্যে পঞ্চগড়েই ১০ হাজার ২৩৯ দশমিক ৮০ একর। এছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ে এক হাজার ৪৫৭ দশমিক ২৯ একর, লালমনিরহাটে ২২২ দশমিক ৩৮ একর, দিনাজপুরে ৮৯ একর এবং নীলফামারীতে ৭০ দশমিক ৫৯ একর আবাদ রয়েছে। জেলায় ১২ হাজার ৭৯ দশমিক ৬ একর সমতল জমির ৩০টি চা বাগান এবং ৮ হাজারেরও অধিক ক্ষুদ্রায়তনের চা বাগান থেকে সদ্য সমাপ্ত (২০২২) মৌসুমে চা উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ৭৭ লাখ ৫৯ হাজার ২২৬ কেজি।  যা বিগত বছরের তুলনায় ৩২ লাখ ১৯ হাজার ২২৬ কেজি বেশি উৎপাদনের মাধ্যমে অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়েছে। 

পঞ্চগড়স্থ বাংলাদেশ চা বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয়ে, উন্নয়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন বলেন, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রুনিং সুপারিশমালা অনুযায়ী ডিসেম্বর -ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চা গাছ বিভিন্ন উচ্চতায় পুনিং/ছাঁটাই করতে হয়। তাই বিগত বছরের ন্যায় টেকসই চা উৎপাদন ও গুণগতমান বৃদ্ধির লক্ষ্যে পঞ্চগড় জেলার চা বাগানসমূহে সুষ্ঠুভাবে প্রুনিং কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে। ১ জানুয়ারি  থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি  পর্যন্ত এ জেলার সকল চা কারখানায় কাঁচা চা পাতা সরবরাহ ও চা প্রক্রিয়াজাত বন্ধ থাকে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here