পদ বাণিজ্য: দুই বিএনপি নেতার কথোপকথন ভাইরাল

বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃত্ব পাইয়ে দিতে মোটা অংকের ঘুষ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদধারীদের বিরুদ্ধে। যদিও এ অভিযোগ পুরনো। তবে এবার নতুন করে পদ বাণিজ্য আলোচনায় এসেছে দুই বিএনপি নেতার কথোপকথনের অডিও ভাইরালের কারণে।

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্ব পেতে ৬০ লাখ টাকা খরচ করেছন এক নেতা। জেলা বিএনপির তৎকালীন আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব ছাড়াও কেন্দ্রীয় কমিটির এক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদককে এ অর্থ দিয়েছেন তিনি।

আর্থিক লেনদেনকারী বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক হারুন-অর রশিদ সিকদার ও যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান মিজানের একান্ত কথোপকথনে পদ বাণিজ্যের বিষয়টি উঠে এসেছে।

গত ১৫ নভেম্বর হারুন অর রশিদ সিকদারকে আহ্বায়ক ও মিজানুর রহমান চুন্নুকে সদস্য সচিব করে বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। এরপর অর্থ খরচের আলোচনা করেন আহ্বায়ক হারুন ও যুগ্ম-আহ্বায়ক কামরুজ্জামান মিজান। যার একটি অডিও গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

ঐ অডিওতে শোনা গেছে, উপজেলা কমিটি পেতে কত টাকা নেতাদের দিতে হয়েছে তার হিসাব হারুনের কাছে জানতে চান মিজান। হারুন মিজানকে বলেন- তোমার মনে হয় কত কও! মিজান বলেন, আমি একবার শুনছি ২০ লাখ টাকার কথা কইছে। হে (জেলার তৎকালীন সদস্য সচিব) ১০ লাখ আর ওস্তাদের (জেলার তৎকালীন আহ্বায়ক) ১০ লাখ টাকার প্রস্তাব দেছে শুনছি।

হারুন বলেন, এই উদবাগটা করছে (হা..র পো হা ..য়) মেবুইল্লাহ! ওস্তাদরে ডাইরেক্ট কইছে ১০ লাখ লই, আমনে ৫ আমি ৫। এ কথা তুই কারোরে কইস না আল্লাহর কাছে ঠেকা থাকবি। তখন মিজান বলেন, না কমু না। হারুন বলেন, ১০ লাখের ৫ ওস্তাদরে আর ৫ মেবুলরে দিছি। হেরপর টুকিটাকি তো হিসাব ছাড়া। ধরো জাহিদ (মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব), তসলিম (জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক), ভিপি কালা নান্নু- যেহানে যা লাগে কোনো ত্রুটি করি নাই।

কামরুজ্জামান মিজান জানতে চান, তসলিমরে কি ৫? আমরা কালকে হিসাব করছি- কমিটি পাইতে আপনার ৬০ লাখ টাকা গ্যাছে। আমরা ধরছিলাম মেবুল ভাইরে দেছেন ১০, এহন তো কইলেন ৫। হারুন বলেন, কারো কাছে কবি নাতো। মিজান বলেন, না কারো কাছে কমু না। হারুন বলেন, ৫ এর নিচে জাহিদও রাজি হয় নাই। এগুলো লাগছে খালিখালি। নান্টু ওগোফানে আমাগো ঘুরাইছে। আমি তো নান্টু ভাইরে কব্জা করছি প্রথম চোডেই।

শুধু বাকেরগঞ্জ নয়, বরিশাল উত্তর জেলা, বরগুনা ও পিরোজপুরে কমিটি গঠনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ তুলেছেন কমিটিতে পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরাই।