• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

জরিমানা করলেও থামছে না হাসিল আদায়ে নৈরাজ্য

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

সময় যত গড়াচ্ছে হাটগুলোতে পশুর সরবরাহ বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে ক্রেতার সংখ্যার সমাগম। রংপুর জেলার ৬১টি হাটে এবার ঈদুল আজহা ঘিরে গত সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে পশু বিক্রি। শেষ মুহূর্তে এসে হাটগুলো যতই সরগরম হচ্ছে ততই হাসিল আদায় নিয়ে ততই বাড়ছে ক্রেতাদের অভিযোগ। প্রতিদিন হাটগুলোতে পশু বিক্রির কয়েক লাখ টাকার হাসিল আদায় হচ্ছে।

শনিবার (১৫ জুন) বিকেলে গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি পশুর হাটে অভিযান পরিচালনা করেন রংপুর জেলা প্রশাসনের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধা। অভিযানের সময় অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগে বেতগাড়ি হাটের ইজারাদারের প্রতিনিধি এনামুল হককে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জানা গেছে, কোরবানির পশুর হাটে সরকারি বিধি মোতাবেক গরু প্রতি ৫০০ টাকা এবং ছাগল প্রতি ১৫০ টাকা নেওয়ায় নিয়ম থাকলেও তা উপেক্ষা করে হাট ইজারাদাররা গরু প্রতি ১৫০০ টাকা ও ছাগল প্রতি ৫০০ টাকা হাসিল আদায় করছিলেন।

জেলার বেশির ভাগ পশুর হাটে শুরু থেকেই অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। তবে হাটের ইজারাদাররা এসব অভিযোগে খুব বেশি পাত্তা দিচ্ছেন না। এমনকি অধিকাংশ হাটে মূল্যতালিকাও নেই। অন্যদিকে যারা বছরে একদিন কোরবানির পশু কিনতে যান তারা অতিরিক্ত হাসিল নিয়ে চিন্তা করেন না। আর প্রশাসনের খুব বেশি নজরদারি না থাকায় কোথায় অভিযোগ করবেন, তা অনেকেই জানেন না।

শনিবার কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া তপিকল হাটে গরু কিনতে আসেন ইব্রাহিম হোসেন। তিনি একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার শাখা ব্যবস্থাপক। একটি গরু কিনে ১৫০০ টাকা হাসিল দিয়েছেন তিনি। আবার যে বিক্রি করেছেন তার কাছ থেকেও হাসিল নেওয়া হয়েছে। তবে এসব নিয়ে খুব বেশি তর্কে জড়াননি ইব্রাহিম হোসেন। কারণ, ইজারাদারদের কাছে ক্রেতা-বিক্রেতারা অসহায়। অথচ একটি গরুর জন্য ৬০০ টাকা নির্ধারিত হার ছিল।

শুক্রবার (১৪ জুন) নগরীর নিসবেতগঞ্জ হাটেই আবু তাহের নামে একজন ছাগল বিক্রির ৫০০ টাকা হাসিল দিয়েছেন অথচ নির্ধারিত আছে ২০০ টাকা। কোরবানি ঈদের সময় হাসিল আদায় নিয়ে এমন নৈরাজ্য চললেও প্রশাসনের খুব বেশি নজরদারি নেই বলে দাবি ক্রেতাদের। মাঝেমধ্যে দু-একটি হাটে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। আর সে কারণেই ইজারাদারদের নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।

নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, প্রতিদিন একেকটি হাট থেকে লাখ লাখ টাকা অন্যায়ভাবে হাসিল আদায় করছে ইজারাদাররা। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো মনিটরিং নেই। তাদের দাবি, কোরবানি ঈদের সময় প্রতিটি হাটে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। এতে ইজারাদাররা ক্রেতা-বিক্রেতাকে জিম্মি করতে পারবেন না।

গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) নগরীর বুড়িরহাটে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। এ সময় এমন নৈরাজ্যের প্রমাণ পান এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধা। এজন্য তিনি হাট ইজারাদারের প্রতিনিধিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন।

এ বিষয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, সরকারি বিধি মোতাবেক নির্ধারিত টোল আদায় না করে অতিরিক্ত টোল আদায় ও টোল আদায়ের মূল্যতালিকা না টাঙানোর কারণে জেলার বিভিন্ন হাটে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দুটি হাটের ইজারাদারের প্রতিনিধিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এমন নৈরাজ্য ঠেকাতে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here