• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

২০ জুন থেকে বাজারে মিলবে হাঁড়িভাঙ্গা আম

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৬ জুন ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

হাড়িভাঙ্গা আমের আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে পাওয়া যাবে ২০ জুন থেকে। প্রথমে ১৮ জুন করা হলেও ঢাকা থেকে নির্দেশ আসার পরে দুদিন বাড়িয়ে দেয়া হয় আম পাড়ার দিনক্ষণ। পাকলে এই আম ৩/৪ দিনের বেশি রাখা যায় না। সংরক্ষণের জন্য নেই কোন পদ্ধতি। এই আম সংরক্ষণ করার প্রক্রিয়া চাষিরা পেলে স্থানীয় পর্যায়ে চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও পাঠানো সহজ হত এমনটাই মনে করছেন আম চাষিরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, হাঁড়িভাঙ্গা আম সংরক্ষণে কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট গবেষণা করছে। তবে কবে নাগাদ গবেষণার ফলাফল পাওয়া যাবে তা নিশ্চত করে বলা যাচ্ছে না।    

জানা গেছে, এই আম এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, সংরক্ষণ প্রক্রিয়া না থাকায় রপ্তানিকারকদের মাঝে অনিহা রয়েছে। ফলে বিদেশে বাণিজ্যিক ভাবে কৃষকরা এই আম রপ্তানি করতে পারছে না। জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে হাঁড়িভাঙ্গা আম। এই আমের সুখ্যাতি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও সুনাম অর্জন করলেও সুমিষ্ট এই আম পাকলে ৩/৪ দিনের মধ্যে খেতে হয়। তা না হলে এই আম নষ্ট হয়ে যায়। তাই স্থানীয় সুধিমহল চাচ্ছেন কৃষি বিভাগ এই আম সংক্ষণের পদ্ধতি বের করতে পারলে কৃষকরা এই আম দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে পাঠাতে পারত। 

জেলা সুজনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান কাজী মোঃ জুননুন বলেন, রংপুরের ঐতিহ্য হাঁড়িভাঙ্গা আমকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।  তবে এই আম সংরক্ষণ করতে পারলে চাষিরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি এই সুস্বাদু আমের স্বাদ আরও অনেকে নিতে পারত।  

কেমন করে হাঁড়িভাঙ্গা এল রংপুরে এনিয়ে চমকপ্রদ তথ্য রয়েছে। তা হল মিঠাপুকুরের খোড়াগাছ ইউনিনের তেকানি গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, প্রায় ৮০ বছর আগে তার বাবা নফল উদ্দিন এই গাছটি রোপণ করেছিলেন। তিনি গাছটি প্রসঙ্গে বলেন, শতবছর আগে মিঠাপুকুরের বালুয়া মাসুমপুর এলাকার জমিদার ছিলেন তাজ বাহাদুর সিংহ। তিনি খুব সৌখিন মানুষ ছিলেন। তার একটি ফলের বাগান ছিল। এই বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির ফল ছিল। পেশাদার কিছু আম ব্যবসায়ী তার বাগান থেকে আম নিয়ে পদাগঞ্জ হাটে বিক্রি করতো। সেখান থেকে তার বাবা এই হাঁড়িভাঙ্গা আম ক্রয় করে আবাদ শুরু করেন। আমটি খুবই সুস্বাদু হওয়ায় তৎকালীন আমলে ৫ টাকা দিয়ে একশ আম কিনে আনেন এবং আম খাওয়ার পর আমের আঁটি থেকে চারা গজায়। ভাঙ্গা হাড়ির টুকরোর মাঝখানে গাছটি জন্মেছিল বলে গাছটির নামকরণ করা হয় হাঁড়িভাঙ্গা। তখন থেকেই এই অঞ্চলে হাঁড়িভাঙ্গা আমের যাত্র শুরু হয়। সেই গাছটি এখন পর্যন্ত জীবিত রয়েছে এবং ফলও দিচ্ছে। আমজাদ হোসেন হাঁড়িভাঙ্গা আমের জনক হিসেবে তার বাবার স্বীকৃতি দাবি তরেন। ৭৫ বছর আগের হাঁড়িভাঙ্গা আমের যাত্রা শুরু হলেও ১৯৯২ সাল থেকে রংপুরে হাঁড়িভাঙ্গা আমের সম্প্রসারণ শুরু হয়। হাঁড়িভাঙ্গা আমের সম্প্রসারক আব্দুস ছালাম । তিনি হাঁড়িভাঙ্গা আমের ব্যাপক সম্প্রসারণ করেন। হাঁড়িভাঙ্গা আম ১ হাজার ৯০০ হেক্টরের বেশি জমিতে চাষ হয়। প্রতি হেক্টরে প্রায় ১০/১২ মেট্রিকটন আমের ফলন হয়। যার মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকার বেশি।  

জেলা বৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, এই আম ২০ জুন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে পাওয়া যাবে। এই আমের সংরক্ষণ পদ্ধতি বের করতে ঢাকা কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট গবেষণা করছে।  

Place your advertisement here
Place your advertisement here