• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

চামড়াশিল্পে সিন্ডিকেট, অপতৎপরতা রোধে করণীয়

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

দেশের অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত চামড়াশিল্প। আর চামড়ার বড় একটি অংশ সংগৃহীত হয় কোরবানির ঈদের সময়। তবে এ সময়ে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়। এতে যেমন ক্ষতির মুখে পড়ছে এই শিল্পের মৌসুমী ব্যবসায়ীরা, পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিপুল সম্ভাবনাময় এই শিল্পও।

তবে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিলে লাভজনক ও সম্ভাবনাময় এ শিল্পকে ক্ষতির মুখ থেকে রক্ষা করা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সরকার এরই মধ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। চলতি বছর চামড়ার মূল্য বাড়ানো হয়েছে। আর মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে অন্য সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে পর্যন্ত রফতানির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আয় এসেছে এ খাত থেকে।

তবে গত কয়েক বছর ধরে কুরবানির চামড়া নিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা সংকট। সিন্ডিকেটের প্রভাবে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে চামড়া সংগ্রহ করলেও ট্যানারি মালিকদের কাছে লাভে বিক্রি করতে পারছেন না। আগের অভিজ্ঞতার আলোকে তাই এ বছরও পশুর চামড়ার প্রকৃত মূল্য মিলবে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চামড়া খাতে বর্তমানে ব্যাংকগুলোর মোট বিতরণ করা ঋণের ৯১ শতাংশই খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। এমন অবস্থায় ব্যাংকগুলো এখন হাতে গোনা কয়েকজন ভালো উদ্যোক্তা ছাড়া অন্য কাউকে ঋণ দিতে চাচ্ছে না। এতে মাঝারি ও ক্ষুদ্র উদ্যেক্তারা এ শিল্পের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন।

অতীতে ট্যানারি ও আড়তদারদের কারসাজিতে সরকারের বেঁধে দেওয়া চামড়ার দাম অকার্যকর হতে দেখা গেছে। ফলে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কমে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। এমনকি ন্যায্যমূল্য না পেয়ে চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলা, নদী-নালা বা রাস্তায় ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। তাই এবার যাতে অসাধু ব্যবসায়ী কিংবা সিন্ডিকেট কারসাজি করতে না পারে সেদিকে সরকারকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চামড়ার দাম না বাড়া প্রসঙ্গে আড়তদার ও ট্যানারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদুল আজহায় এক কোটির বেশি পশু কোরবানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঈদের দিন কাঁচা চামড়া আসার হারও সন্তোষজনক। এবার লবণের দাম কিছুটা কমলেও শ্রমিকের মজুরি ও গাড়িভাড়া বেড়েছে। কিছু চামড়া নষ্টও থাকে। সব মিলিয়ে নির্ধারিত দরের চেয়ে কিছুটা কমে কাঁচা চামড়া কিনতে হয়।

চামড়া খাতের একাধিক বাণিজ্য সংগঠনের নেতাদের নিয়ে গত ৩ জুন এক বৈঠক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সে সময় কোরবানি পশুর চামড়ার দর নির্ধারণ করা হয়। এতে ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ৫৫-৬০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০-৫৫ টাকা। ঢাকার বাইরে গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০-৫৫ টাকা, যা গত বছর ছিল ৪৫-৪৮ টাকা। এছাড়া খাসির লবণযুক্ত চামড়া ২০-২৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৮-২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এই হিসেবে সাধারণত বড় আকারের গরুর চামড়া ৩১-৪০ বর্গফুট, মাঝারি আকারের গরুর চামড়া ২১-৩০ এবং ছোট আকারের গরুর চামড়া ১৬-২০ বর্গফুটের হয়। 

নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, ঢাকায় মাঝারি আকারের গরুর ২৫ বর্গফুটের একটি লবণযুক্ত চামড়ার দাম হওয়ার কথা ১ হাজার ৩৭৫ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। এতে লবণ, মজুরি ও অন্যান্য খরচ বাবদ গড়ে ৩০০ টাকা বাদ দিলে ঐ চামড়ার আনুমানিক মূল্য দাঁড়ায় ১ হাজার ৭৫ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

এদিকে এ বছর দাম বাড়ানো হয়েছে খাসি ও বকরির চামড়ার। গত বছর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত খাসির চামড়ার দাম ছিল ১৮-২০ টাকা। এবার সেটি বাড়িয়ে ২০-২৫ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া বকরির চামড়ার দাম বর্গফুট প্রতি বেড়েছে ৬ টাকা।

এবার প্রতিটি গরুর কাঁচা চামড়ার দাম গতবারের তুলনায় ঢাকায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। এরপরও নির্ধারিত দরের চেয়ে ২৭৫-৩০০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে ছাগলের চামড়া কিনতে অনীহা দেখিয়েছেন আড়তদারেরা। একেকটি ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১০ টাকায়।

Place your advertisement here
Place your advertisement here