• রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৭ ১৪৩১

  • || ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আয়-ব্যয়ের লাগাম টানতে নীতিমালা

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আয়-ব্যয়ের লাগাম টানতে হচ্ছে ‘আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নীতিমালা ২০২৩’। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এই নীতিমালা চূড়ান্ত করতে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে। খসড়া এই নীতিমালা একেবারেই চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।

নীতিমালার খসড়ায় বলা হয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা নির্দেশনা মোতাবেক নির্ধারিত খাত ও হার অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা যাবে। শিক্ষা বোর্ড বা সরকারের অনুমোদন ছাড়া নতুন কোনো খাত সৃষ্টি করে অর্থ আদায় করা যাবে না। সব অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের রশিদ দিয়ে হবে। আদায় করা সব অর্থ প্রতিষ্ঠানের সাধারণ তহবিলে জমা রাখতে হবে। সব রকম ফি, বেতন, নিজস্ব আয়, দান-অনুদান ইত্যাদি নির্ধারিত ব্যাংক হিসাব বা মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে। নগদ টাকায় কোনো অর্থ আদায় করা যাবে না। বিশেষ ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নগদ গ্রহণ করতে পারবে, তবে পরবর্তী দুই কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাংক হিসাবে জমা দিতে হবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যয় ভাউচার থাকতে হবে। ভাউচার ছাড়া কোনো ব্যয় গ্রহণযোগ্য হবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব আয়-ব্যয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা বিভাগ, সংশ্লিষ্ট অধিদফতর এবং পরিদর্শন ও নিরীক্ষার অধিদফতরের পরিদর্শন ও নিরীক্ষার আওতাভুক্ত থাকবে। 

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী এই নীতিমালা সম্পর্কে বলেন, অধিকতর যাচাই-বাছাই শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা-সংক্রান্ত নীতিমালা শিগগিরই চূড়ান্ত করা হবে। এই নীতিমালা হওয়ার পর এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অনেক অনিয়ম বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ, কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ আর্থিক অনিয়ম করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকবে। খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি মনোনীত একজন সদস্যের নেতৃত্বে দুজন সিনিয়র শিক্ষকের সমন্বয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট অর্থ ও ক্রয় উপ-কমিটি গঠন করতে হবে। নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি না থাকলে অ্যাডহক কমিটির ক্ষেত্রেও একইভাবে এটি প্রযোজ্য হবে। দুই বছরের জন্য এই উপকমিটি গঠন করতে হবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন সিনিয়র শিক্ষকের সমন্বয়ে বেতন, ফি আদায় উপ-কমিটি গঠন করতে হবে। এই উপকমিটির তত্ত্বাবধানে সব রকম প্রকার ফি ও বেতন আদায় করা হবে। প্রতিমাসেই এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি বরাবর দাখিল করতে হবে। সম্ভাব্য আয়-ব্যয়ের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষাবর্ষ শুরুর পূর্বেই অর্থ ও ক্রয় উপ-কমিটি বাজেট প্রণয়ন করে ম্যানেজিং কমিটি বা ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। এই নীতিমালার আওতায় আদায়যোগ্য সব অর্থসহ অন্যান্য উৎস থেকে প্রাপ্ত অর্থ নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠানের পর পরবর্তী সভা অনুষ্ঠানের পূর্ব পর্যন্ত সব আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রধান শিক্ষক কর্তৃক উপস্থাপন করতে হবে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের যৌথ স্বাক্ষরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হিসাব পরিচালিত হবে। তহবিলের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রচলিত বিধি মোতাবেক প্রধান শিক্ষক কর্তৃক সংরক্ষণ করতে হবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে- প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক মনোনীত তিনজন দক্ষ অভিজ্ঞ শিক্ষকের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ অডিট উপ-কমিটি গঠন করতে হবে। অডিট কমিটি প্রতি শিক্ষাবছর অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা সম্পন্ন করে পরবর্তী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ম্যানেজিং কমিটির কাছে দাখিল করবে। ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে কোনো আর্থিক অনিয়ম বা দুর্নীতি হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দায়বদ্ধতা থাকবে এবং প্রচলিত বিধি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

দৈনন্দিন আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটানোর জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের ক্যাশে অর্থ খরচ করার সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে নীতিমালায়। খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী মাধ্যমিক স্তরে সর্বোচ্চ ১০ হাজার, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ১৫ হাজার, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করা যাবে। ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত হারে ভ্যাট ও আয়কর কর্তন করে সরকারি কোষাগারে জমা করতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here