• রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৬ ১৪৩১

  • || ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

মানুষের হাতে বাড়তি টাকা রাখার প্রবণতা কমেছে                     

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

Find us in facebook

Find us in facebook

     

উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে এমনিতেই মানুষের সঞ্চয় প্রবণতা কম। এর মধ্যে নানা অনিয়মের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিজের কাছে রাখার প্রবণতা দেখা দেয়। এর প্রভাবে গত ২২ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাইরে থাকা ছাপানো নোট বেড়ে রেকর্ড ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা হয়। গত ২৬ জানুয়ারির হিসাবে তা কমে দাঁড়ায় ২ লাখ ৮৭ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা। এর মানে এক মাস ৪ দিনের ব্যবধানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ফিরেছে ৭ হাজার ২২১ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মানুষের হাতে বাড়তি টাকা রাখার প্রবণতা কিছুটা কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবর শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাইরে ছাপানো নোট ছিল ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এরপর থেকে প্রতি কর্মদিবসে গড়ে এক হাজার কোটি টাকার বেশি উত্তোলন হয়। গত ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৭ কর্মদিবসে ৩৮ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাইরে। টাকা সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছিল ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে কোনো ব্যাংক যাতে গ্রাহকের চাহিদা মতো টাকা দিতে ব্যর্থ না হয় সে জন্য সতর্ক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বেশি সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোকে নানাভাবে সহায়তা দেওয়া হয়।

সংশ্নিষ্টরা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের বাইরে থাকা নোটের মধ্যে সারাদেশের ব্যাংক শাখার দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে ১৪ থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা থাকে। বাকি টাকা থাকে মানুষের কাছে। স্থাপনা ভাড়া, ব্যক্তিগত কেনাকাটার বিল পরিশোধসহ দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে যা ব্যয় হয়। ব্যবসায়িক লেনদেন মেটাতেও নগদ টাকার দরকার হয়। বিশ্বের অনেক দেশের লেনদেনের বড় অংশই এখন 'ক্যাশলেস' বা ডিজিটাল স্থানান্তরের মাধ্যমে হয়। তবে বাংলাদেশে ব্যক্তি পর্যায়ের কেনাকাটাসহ বিভিন্ন লেনদেনের বড় অংশই করতে হয় ক্যাশ বা নগদে। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী চার বছরের মধ্যে মোট লেনদেনের অন্তত ৭৫ শতাংশ নগদবিহীন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে গত ১৮ জানুয়ারি ফুটপাতের দোকানেও 'কিউআর কোডভিত্তিক' পরিশোধ সুবিধা চালু করা হয়েছে। এক কিউআর দিয়ে যে কোনো ব্যাংক ও এমএফএসে পরিশোধের সুবিধা দিতে 'বাংলা কিউআর' ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশের মোট সঞ্চয়ের খুব কম থাকে ছাপানো নোট। বাকি লেনদেন হয় অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরভিত্তিক। ছাপানো নোট একই দিন একাধিক হাতবদল হতে পারে। কয়েক হাত ঘুরে বা সরাসরি ছাপা টাকা কখনও ব্যাংকে, কখনও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কখনও মানুষের হাতে থাকে। এই ঘূর্ণায়মান চাহিদা পদ্ধতির কারণে সঞ্চয়ের পুরোটা ছাপানোর দরকার হয় না। এ ছাড়া প্রতিটি ব্যাংক শাখার ভল্টে কী পরিমাণ টাকা রাখা যাবে তার সীমা নির্ধারিত আছে। কোনো শাখায় নির্ধারিত সীমার বেশি টাকা জমা হলেই তা বাংলাদেশ ব্যাংক বা সোনালী ব্যাংকে জমা দিতে হয়। ফলে কী পরিমাণ টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে রয়েছে কয়েকদিন পরপর সে হিসাব জানা যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে বর্তমানে ছাপানো নোট রয়েছে ৩ লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষে ৩ হাজার কোটি টাকা রয়েছে পোড়ানোর জন্য। আর ১৫ হাজার কোটি টাকার মতো রয়েছে পুরোনো, অধিক ময়লাযুক্ত বা অতিরিক্ত দাগানো। অপ্রচলিত হিসেবে ব্যাংকগুলো এসব নোট কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিয়েছে। সাধারণভাবে এসব নোট বাছাই করে কিছু আবার প্রচলনে দেওয়া হয়। বাকি টাকা পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। মাঝে কিছুদিন ছাপানো নোটের চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় এ ধরনের নোট বাছাই না করেই বাজারে দিচ্ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন নতুন করে টাকা যাচ্ছে না, বরং প্রতিনিয়ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ফিরছে। ফলে ছাপানো টাকার ওপর চাপ কমেছে।

 


 

Place your advertisement here
Place your advertisement here