• শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৬ ১৪৩১

  • || ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

এ মাসেই পদ্মা সেতুর ৩০তম স্প্যান বসছে

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৬ মে ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

পদ্মা সেতুর ৩০তম স্প্যান বসছে চলতি মাসেই। ‘৫বি’ নম্বর এই স্প্যান বসবে ২৬ ও ২৭ খুঁটিতে। জাজিরা প্রান্তের ২৭ নম্বর খুঁটিতে লিফটিং ফ্রেম স্থাপন হয়েছে। অন্যান্য খুঁটিনাটি কাজও সম্পন্ন এখন। এদিকে ‘৫বি’ নম্বর স্প্যানটি চূড়ান্ত রংও শেষ প্রায়। ২/১ দিনের মধ্যেই এটির রঙের কাজ সম্পন্ন হবে। এরপরই রঙের কাজ অনুমোদন পর্ব। রঙের কাজ অনুমোদন হলে এটি ক্রেন লাইনে বের করে ইয়ার্ডের সামনে নিয়ে আসা হবে। এতে সপ্তাহ খানেক সময় লাগতে পারে। এসব তথ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মোঃ আব্দুল কাদের জানান, ৩০ মে টার্গেট রাখা হয়েছে ৩০তম স্প্যান বসানোর জন্য। তবে এর আগেই ৩০তম স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ৩০তম স্প্যান স্থাপনে পদ্মা সেতু সাড়ে ৪ কিলোমিটার দৃশ্যমান হবে।

এদিকে পদ্মা সেতুর স্প্যানের মালামালের শেষ চীনা চালান যাত্রা শুরু করেছে। শিনহোয়াংদাও বন্দর হতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টা) বাংলাদেশের উদ্দেশে সমুদ্র পথে রওনা হয়েছে। চীনা পতাকাবাহী এমভি কং সিউ সং জাহাজ মূল সেতুর মালামালহুলো বহন করছে। এ চালানটি দেশে পৌঁছালে সেতুর সকল মালামাল বাংলাদেশে আসা সম্পূর্ণ হবে।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মোঃ আব্দুল কাদের জানান, সেতুর সর্বশেষ এ মালামালসমূহ মার্চের মধ্যে বাংলাদেশে আনার লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে চলছিল। কিন্তু চীনের উহানে ভয়ানক করোনাভাইরাসের সংক্রমণে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে স্প্যানের মালামাল তৈরির কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। এপ্রিলের শেষের দিক থেকে আবার ফ্যাক্টরি খুললে চলতি মে-এর শেষ দিকে স্প্যানগুলোর কম্পোনেন্ট তৈরি কাজ শেষ হয়। বর্ণিত এমভি কং সিউ সং জাহাজে সেতুর ১৮০টি ট্রাস কম্পোনেন্টসহ ২০৪১টি স্ট্রিলের তৈরি বিভিন্ন মালামাল রয়েছে। সেতুর সর্বশেষ মালামাল পরিবহনের দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিক কসকো শিপিং লাইন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জাহাজটি সাংহাই ও সিঙ্গাপুর পোর্টে সাতদিন বিরতি (মালামাল লোড/আনলোড) দিয়ে ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছবে। চট্টগ্রাম বন্দরে কাস্টমস শুল্ক পরিশোধ ও ক্লিয়ারেন্সের পর মংলা হয়ে ১৫ জুন চালানটি মাওয়া এসে পৌঁছার কথা রয়েছে।

চীনা শিনহোয়াংদাও পোর্টটি রাজধানী বেজিং থেকে ৬০০ কি.মি দূরে কোরিয়া উপসাগরের পাড়ে অবস্থিত। যার অপর পাড়ে উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার সীমানা রয়েছে। এই শীনহোয়াংদাও বন্দরের পাশেই চীনের বিখ্যাত গ্রেট ওয়াল সমদ্রে মিশে গেছে, যা গ্রেট ওয়ালের হেড বা মাথা নামে পরিচিত। এই প্রকৌশলী জানান, বিশব্যাপী করোনার যুদ্ধের মধ্যেও সেখান থেকেই এই চালানটি রওনা হলো। পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল সেতুতে মোট ৪১টি স্প্যান রয়েছে। প্রতিটি স্প্যানে ১১০-১১৮টি স্টিলের ট্রাস কম্পোনেন্ট (কর্ড, মেম্বার বা নোড)-এর সমন্বয়ে তৈরি ট্রাস। মূল সেতুর ৪১টি স্প্যানে সর্বমোট ৪৫৮৭ স্ট্রিলের ট্রাস কম্পোনেন্ট প্রয়োজন হবে। ৪৫৮৭টি স্টিলের ট্রাস কম্পোনেন্ট মূল সেতুর স্প্যান (স্কলিটন) তৈরি করবে। তাছাড়াও রেলওয়ের জন্য ১৩১২টি স্টিলের স্ট্রিনজার বিম, ২৬২৪টি স্টিলের রেলওয়ে সাপোর্ট ব্রাকেট, ১৩১২টি স্টিলের রেলওয়ে স্প্যাব ব্রাকেট, ৮২১৪টি গ্যান্ট্রি মেইনটেন্যান্স ব্রাকেট, ১৩৪৬টি গ্যাস পাইপ লাইন ব্রাকেট, ৯৩০টি হ্যাচ কভার, ৯১০টি এ্যাকসেস ল্যাডার, ৪৮টি ট্রান্সভার্স শেয়ার কি, ২১টি গ্যাস পাইপ লাইন লুপ, ১৩১২টি ওভারহেড ক্রেন স্টিলের গার্ডার প্রয়োজন হবে।

পদ্মা সেতুর এখন সার্বিক অগ্রগতি এখন ৭৯ শতাংশ। এর মধ্যে মূল সেতু বেশি এগিয়ে। মূল সেতুর অগ্রগতি ৮৭ শতাংশ। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটি দ্বিতল হবে, যার ওপর দিয়ে সড়কপথ ও নিচের অংশে থাকবে রেলপথ। সেতুর এক খুঁটি থেকে আরেক খুঁটির দূরত্ব প্রায় ১৫০ মিটার। একেকটি খুঁটি ৫০ হাজার টন লোড নিতে সক্ষম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতায় নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূলসেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে চীনের ‘সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন’।

Place your advertisement here
Place your advertisement here