• শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৬ ১৪৩১

  • || ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

আট জেলায় নগদ টাকা বিতরণ করবেন প্রধানমন্ত্রী

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২০  

Find us in facebook

Find us in facebook

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ যেমন রিকশা-ভ্যানচালক ও মোটর শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিকদের মতো পেশাজীবীরা সরকারি সহায়তা পাবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তর থেকে বিভিন্ন পেশার প্রায় ৫০ লাখ পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হবে নগদ অর্থ। প্রত্যেক পরিবার এককালীন ২ হাজার ৫০০ টাকা করে পাবে। গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের হিসাবে সরাসরি নগদ অর্থ প্রেরণের এই উদ্যোগের উদ্বোধন করবেন। বিতরণ চলবে আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগ পর্যন্ত। প্রাথমিকভাবে আজ আট জেলায় নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হবে। জেলাগুলো হচ্ছে, চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী, ঢাকা বিভাগের মাদারীপুর, ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর, রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাগঞ্জ, রংপুরের কুড়িগ্রাম, সিলেটের সুনামগঞ্জ, খুলনার সাতক্ষীরা এবং বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলায়। করোনাভাইরাসের কারণে মানবিক দুর্যোগ শুরুর পর গত ২৪ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ৪ কোটি মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে সরকার।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে ৫০ লাখ পরিবারকে সহায়তা দেওয়ার কার্যক্রম আজ থেকে শুরু হচ্ছে। যদিও উপকারভোগীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ৩৮ লাখ পরিবারের তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। তথ্যে ঘাটতি ও অসংগতি থাকায় ১২ লাখের তালিকা গতকাল বিকাল পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। ৫০ লাখ পরিবারের তালিকা করে ৩ মের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে মাঠ প্রশাসনকে বলা হয়েছিল। কিন্তু গতকাল বুধবার পর্যন্ত ১২ লাখ পরিবারের কারও মোবাইল বা ঠিকানা ঠিকমতো না থাকাসহ অন্যান্য কিছু অসংগতি থাকায় পুরো তালিকাটি চূড়ান্ত হয়নি। সে গুলো সংশোধন করা হচ্ছে। উদ্যোগটির সঙ্গে জড়িত রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। আর পরিবার চিহ্নিত করা হয়েছে স্থানীয় সরকার অর্থাৎ জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের সাহায্যে। তালিকায় রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, নির্মাণশ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, দোকানের কর্মচারী, ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসায় কর্মরত শ্রমিক, পোলট্রি খামারের শ্রমিক, বাস-ট্রাকসহ পরিবহন শ্রমিক, হকারসহ নানা পেশার মানুষকে এ তালিকা রাখা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়ন সচিব মো. শাহ কামাল গতকাল বুধবার ইনকিলাবকে বলেন, চলতি মে মাস থেকে জুন পযন্ত দুই মাসে ৫০লাখ পরিবার পাঁচ হাজার করে টাকা পাবে। বিকাশ, নগদ, ক্যাশ, রকেটের মাধ্যমে পরিবারগুলোর কাছে টাকা পৌঁছে যাবে।

সচিব বলেন, ১২ লাখের তালিকাও খুব তাড়াতাড়ি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। অনিয়ম ঠেকাতে এবার উপকারভোগীদের নামে করা ডিজিটাল কার্ডের ভিত্তিতে এই সহায়তা দেওয়া হবে। এ জন্যই তালিকা করতে কিছু সময় লাগছে। ইতোমধ্যে এক হাজার ২৫৭ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সহায়তার এ অর্থ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিনা খরচে প্রত্যেক পরিবারের হাতে ঈদের আগে পৌঁছে দেয়া হবে।

সরকারের এ কাজে সহযোগিতা করবে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সেবাদানকারী চার প্রতিষ্ঠান। এগুলো মধ্যে রয়েছে, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের আর্থিক লেনদেন সেবা ‘নগদ’, ব্র্যাংক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিং ‘বিকাশ’, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ‘রকেট’ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত¡ রূপালী ব্যাংকের শিওরক্যাশ।

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি চলছে। একই সঙ্গে সারা দেশে লকডাউন পরিস্থিতি শুরু হয়। এতে লাখ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন গরিব-শ্রমজীবী এবং মধ্যবৃক্ত মানুষ। এ জন্য এসব মানুষকে খাদ্যসহায়তা দিচ্ছে সরকার। পাশাপাশি অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে সহায়তা অব্যাহত আছে।

৬৪টি জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় গত ১১ মে পর্যন্ত করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে মানবিক সহায়তা হিসেবে সারা দেশে সাড়ে চার কোটির বেশি মানুষকে ত্রাণ দিয়েছে। সারা দেশে ত্রাণ হিসেবে এক লাখ ৫৩ হাজার ২১৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমেধ্য বিতরণ করা হয়েছে এক লাখ ১৫ হাজার ৩৩ মেট্রিক টন। মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, ত্রাণ হিসেবে নগদ ৬৪ কোটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ৫২ কোটি ৭৬ লাখ ৮২ হাজার ৫২৩ টাকা। এতে ৫৯ লাখ ৯৬ হাজার ১১৫টি পরিবারের উপকারভোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ১০ লাখ মানুষ। এছাড়া শিশুদের খাদ্য কিনতে ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও ১৩ কোটি ১০ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এতে উপকারভোগী পরিবার সংখ্যা চার লাখ এবং লোক সংখ্যা প্রায় আট লাখ।

Place your advertisement here
Place your advertisement here