• শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ২ ১৪৩১

  • || ১৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

Find us in facebook

বীরগঞ্জের মিলনমেলায় আদিবাসী তরুণ-তরুণীরা

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

দিনাজপুরের বীরগঞ্জের ঐতিহাসিক মিলনমেলায় জীবন সঙ্গীর খোঁজে ছুটে আসেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা। স্থানীয়ভাবে এটা আদিবাসীদের মিলন মেলা নামে পরিচিত। 

শারদীয় দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীর তিন দিন পরে উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের গোপালগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মিলনমেলার উৎসবে মেতে উঠেন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বীরগঞ্জ উপজেলা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির আয়োজনে গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন বয়সের মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় উৎসবমুখর পরিবেশে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে এই ব্যতিক্রমধর্মী মেলা। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘বউ মেলা’ নামে পরিচিত।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত মেলায় দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, রাজশাহী ও নওগাঁ জেলার আদিবাসীদের অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। এই মেলার বিশেষ আকর্ষণ হল ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েরা এখান থেকে পছন্দের জীবন সঙ্গী খুঁজে নিতে পারেন। এখানে কোন পাত্র বা পাত্রী পছন্দ হলে পারিবারিক ভাবে ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়া হয়। তবে মেলায় এই ঐতিহ্যবাহী রীতিতে কিছুটা ভাটা পড়েছে।

উপজেলার আদিবাসী নারী নেত্রী রানী রাসদা বলেন, সময়ের সাথে আদিবাসীদের জীবনযাত্রায় এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে। বেশিরভাগ আদিবাসী ছেলে মেয়েরা এখন বিদ্যালয় মুখী হয়েছে। তাই পুরোনো ঐতিহ্যগুলি অনেকটাই মুছে যেতে বসেছে।

মেলায় সেতাবগঞ্জ থেকে আসা আদিবাসী যুবক সাগর সরেন বলেন, বন্ধুদের সাথে মেলায় এসেছি এখানে আদিবাসীদের নাচ-গান, কৃষ্টি কালচারসহ অনেক প্রিয় মানুষের দেখা মেলে। একটা সময় এ মেলায় জীবনসঙ্গী খুঁজে নেওয়ার প্রচলন ছিল তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় সব বদলে গেছে এখন এই রীতিতে ভাটা পড়েছে।

মেলা আয়োজক কমিটির বীরগঞ্জ থানা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির কমলা কান্ত হাসদা বলেন, আদিবাসী মিলন মেলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি ও কৃষ্টি কালচার কে তুলে ধরা। এখানে অনেক আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা হয়। এই মেলার প্রচলন আদিকাল থেকে। তবে কবে থেকে এ মেলার প্রচলন শুরু হয়েছে সেটা সঠিকভাবে বলা যাবে না। আনুমানিকভাবে কয়েক শত বছর পূর্বে থেকে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এটি বাপ দাদার কাছে শুনেছি। তবে বিয়ের বিষয়টি আগের মত করে এখন আর  হয়না। মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে এলাকার সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।

বিশিষ্ট সমাজসেবক ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, এই মেলাটি আমাদের পূর্বপুরুষের আমল হতে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই মেলাকে ঘিরে সব আয়োজন বেশ নন্দিত হয়েছে। দেশবাসীর কাছে আমাদের আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য কৃষ্টি কালচার পরিচিতি লাভ করেছে। তবে এ বছর আর্থিক সংকটের কারণে এ মেলা অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে বেশ জটিলতা তৈরি হয়েছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে উদ্বেগ নিয়ে সকলের সহযোগিতায় মেলা আনন্দমুখর এবং বর্ণিল ভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

Place your advertisement here
Place your advertisement here