• বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৪ ১৪৩১

  • || ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

Find us in facebook

মায়াবী রূপের ভিনদেশি গ্রেটার ফ্লেমিংগো পাখি পঞ্চগড়ে

– দৈনিক রংপুর নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

Find us in facebook

Find us in facebook

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে দেখা মিলেছে মায়াবী রূপের ভিনদেশি গ্রেটার ফ্লেমিংগো পাখির। পাখিটির দেখা মেলে দক্ষিণ আমেরিকার জলচরে কিংবা ক্যারিবিয়ানের কোনো দ্বীপে। সেই ভিনদেশি পাখির দেখা মিলেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে দেবীগঞ্জ পৌর সদরের ময়নামতির চরে পাখিটিকে অবমুক্ত করা হয়। পাখিটি সম্পর্কে জানা যায়, এটি গ্রেটার ফ্লেমিঙ্গো নামেই সর্বাধিক পরিচিত। তবে আঞ্চলিকভাবে এটি বাংলায় কানঠুঁটি নামে পরিচিত। এটি সারস আকৃতির পাখি। একসময় এদেশেই থাকতো এই ফ্লেমিঙ্গো পাখিরা। ১৯৬০ সালের দিকে এ অঞ্চলে বিচরণ ছিল ফ্লেমিঙ্গো পাখিদের। ১৯৭০ সালের দিকে সর্বশেষ ভোলা জেলার মনপূরা দ্বীপে দেখা গেছে। কালের বিবর্তনে এখন পরিযায়ী পাখি হিসেবে দেখা হয় এ পাখিটিকে। বর্তমানে আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়ার কিছু অঞ্চল, স্পেন, আলবেনিয়া, তুরস্ক, গ্রিস, সাইপ্রাস, পর্তুগাল, ইতালি ও ফ্রান্সের কিছু এলাকায় এদের ব্যাপক বিচরণ রয়েছে।

পাখিটি সাদা-গোলাপি বর্ণের। পালক সিঁদুরে লাল, ডানার বাকি অংশ কালো, গলা ও পা অস্বাভাবিক লম্বা এবং গোলাপি। পায়ের পাতা হাঁসের পায়ের মতো জোড়া লাগানো। বাঁকানো ঠোঁটের ডগা কুচকুচে কালো, বাকি অংশ গোলাপি। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। এরা লম্বায় ১৪৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। ওজন চার থেকে সাড়ে চার কেজি। বেশিরভাগই লোনা জলাঞ্চলে বিচরণ করে। এক সাথে পঞ্চাশ থেকে হাজারেও বেশি পাখি দলবদ্ধ থাকে। এরা ঘুমায়ও এভাবে। শরীরের তাপমাত্রা বাঁচাতে কখনো এক পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। তার আরেকটি পা তখন থাকে পালকাচ্ছাদিত শরীরের উষ্ণতায়। মাঝে মাঝে পা বদল করে দাঁড়ায়। এরা সাঁতরাতে, দৌড়াতে ও উড়তেও পারে। তারা জলে দাঁড়িয়ে শিকার খোঁজে ভিন্ন কৌশলে। স্বাভাবিকভাবে ঠোঁট না চালিয়ে উল্টো করে জলে ডুবিয়ে কুচা চিংড়ি বা জলজ কীট শিকার করে। এদের প্রধান খাবার কুচা চিংড়ি-জাতীয় সামুদ্রিক প্রাণি, ছোট শামুক, গুগলি, জলজ পোকামাকর।

ফ্লেমিংগো উদ্ধারকারী ধলা মিয়া বলেন, ৮ সেপ্টেম্বর ভোরে ময়নামতি চড় সংলগ্ন করতোয়া নদীতে মাছ ধরতে যাই। সেখানে গিয়ে পাখিটিকে দেখতে পাই। পাখিটিকে ধরে বাড়িতে নিয়ে এসে দূর্বল মনে হলে তাকে নিয়মিত নিয়মিত মাছসহ অন্যান্য খাবার খাইয়ে সুস্থ করি। জানতাম না পাখিটি বিদেশি। তাই পাখিটি সুস্থ হলে ছেড়ে দিয়েছি।

জানা যায়, স্থানীয় জেলে ধলা মিয়া গত ৮ সেপ্টেম্বর ভোরে করতোয়া নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ফ্লেমিংগো নামের এ পাখিকে দেখতে পান। বক মনে করে নদী থেকে ধরে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর জানতে পারেন পাখিটি বক নয়, এটি গ্রেটার ফ্লেমিঙ্গো। তখন থেকেই পাখিটিকে পুষতে শুরু করেন। বিষয়টি জানার পর স্থানীয় লালন সরকার নামের এক সাংবাদিক ফ্লেমিংগো পাখিটিকে নিয়ে ফেসবুক পেজে পোস্ট দেন। প্রকাশের মুহূর্তেই পোস্টটি ভাইরাল হলে বিদেশি ওই পাখি দেখতে ধলা মিয়ার বাড়িতে ভিড় জমান নানান বয়সী দর্শনার্থী। এক সপ্তাহ পর সোমবার সকালে পাখিটিকে নদীর ধারে ছেড়ে দেন ধলা মিয়া।

Place your advertisement here
Place your advertisement here